করোনাভাইরাস
৫৮ শতাংশ পরিবার খুব কম খাবার খেয়ে দিন পার করছে
20 Jun, 2020 08:11pm

করোনাভাইরাসের প্রভাবে সরকার ঘোষিত লকডাউনে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ায় দেশের ৯৫ শতাংশ পরিবারের উপার্জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে দৈনিক রোজগার বা ব্যবসা বন্ধ থাকায় ৭৮.৩ শতাংশ পরিবারের উপার্জন কমেছে। বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
সংস্থাটি বলেছে, করোনার প্রভাবে সৃষ্ট সামাজিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে শিশু, বিশেষ করে যারা শহর বা গ্রামের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বাস করছে, তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে।
শনিবার [২০ জুন ২০২০] ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এর কভিড-১৯ র্যাপিড ইমপ্যাক্ট এ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদন মতে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ শিশু, যার মধ্যে ৪৬ শতাংশ দ্ররিদ্র এবং এর এক-চতুর্থাংশ অতিদরিদ্রতার মধ্যে বেড়ে উঠছে।
অন্তর্র্বতীকালীন ন্যাশনাল ডিরেক্টর চন্দন গোমেজ বলেন, আমরা শংকিত যে ৫ বছরের কম বয়সী সেই সকল শিশুদের নিয়ে যারা অপুষ্টির মত প্রতিরোধযোগ্য সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে আছে, যা দেশে শিশু মৃত্যুর হার বাড়িয়ে তুলতে পারে। দেশের ২৬টি জেলার ৫৭টি উপজেলার আমাদের কর্ম এলাকাগুলোতে আমরা দেখেছি খাদ্য সংকটের কারণে অপুষ্টির মত সমস্যাগুলোতে শিশুরা অধিক মাত্রায় সংক্রমিত হচ্ছে।
প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে, জরিপ এলাকার ৯৪.৭ শতাংশ পরিবারে খুব সামান্য অথবা কোন খাবার সঞ্চিত নেই যেখানে ৩৮.৫ শতাংশ শিশু এবং ৫৮.৯ শতাংশ প্রাপ্তবয়ষ্ক ব্যক্তি দিনে সর্বোচ্চ দুইবেলা খেতে পারছেন। এছাড়া ৫৮ শতাংশ পরিবার খুব কম খাবার খেয়ে দিন পার করছে।
প্রতিবেদনটিতে আরও উঠে এসেছে, প্রায় ৩৪ শতাংশ পরিবার রান্না, ধোয়া-মোছা ও পান করার জন্য নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি পাচ্ছে না। অন্যদিকে ৫০ শতাংশ পরিবার স্বাস্থ্যবিধি উপকরণ এবং পরিষ্কার পানির অপর্যাপ্ততার কারণে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পারছে না।
চন্দন গোমেজ বলেন, আমি শংকিত সেই ৮৭ শতাংশ শিশুদের নিয়ে যারা বাড়িতে থেকে বিচ্ছিন্ন বোধ করছে এবং ৯১.৫ শতাংশ শিশু যারা কোভিড-১৯ নিয়ে দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের শিশু এবং তাদের পার্শ্ববর্তী জনবসতিসহ বাংলাদেশের সকল শিশুদের বর্তমান পরিস্থিতিতে যে সকল সমস্যা প্রভাবিত করছে তা সমাধানে আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া এবং এই সমস্যাগুলো সমাধানে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
স্মরণীয়, বাংলাদেশের আটটি বিভাগের ৫২টি উপজেলার ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী এক হাজার ৬১৬ জন শিশু এবং দুই হাজার ৬৭১ জন প্রাপ্তবয়ষ্ক ব্যক্তির উপর পরিচালিত জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য নিয়ে র্যাপিড ইমপ্যাক্ট এ্যাসেসমেন্ট প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
বিভাগ : উন্নয়ন